0 / 0
55,332২০/সফর/১৪৩৯ , 9/নভেম্বর/2017

ওযুর ফরয ও সুন্নতসমূহ

প্রশ্ন: 226422

ওযুর রুকন, ওয়াজিব ও সুন্নতসমূহ কি কি?

উত্তর

আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা

এক:

ওযুর রুকন ও ফরয ৬টি:

১। মুখমণ্ডল ধৌত করা। মুখ ও নাক মুখমণ্ডলের অংশ।

২। দুই হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করা।

৩। মাথা মাসেহ করা।

৪। দুই পা টাকনুসহ ধৌত করা।

৫। ওযুর অঙ্গগুলোর মাঝে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা।

৬। পরম্পরা রক্ষা করা (অর্থাৎ অঙ্গগুলো ধৌত করার ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময়ের বিরতি না দেয়া)।

আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: “হে মুমিনগণ, যখন তোমরা সালাতের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাতগুলো কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও এবং তোমাদের মাথায় মাসেহ কর এবং পায়ের টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে নাও।”[সূরা মায়েদা, আয়াত: ৬]

দেখুন: ইবনে কাসিম এর হাশিয়াসহ ‘আল-রওযুল মুরবি’ (১/১৮১-১৮৮)]

শাইখ ইবনে উছাইমীন (রহঃ) বলেন:

এখানে ওযুর ফরয দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে– ওযুর রুকনসমূহ।

এর মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে, ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে আলেমগণের ভিন্নতা রয়েছে। কেউ কেউ ফরযগুলোকে রুকন হিসেবে উল্লেখ করেন। আবার কেউ কেউ রুকনগুলোকে ফরয হিসেবে উল্লেখ করেন।[‘আল-শারহুল মুমতি (১/১৮৩) থেকে সমাপ্ত]

ইতিপূর্বে আমরা উল্লেখ করেছি যে, জমহুর আলেম এর নিকট ফরযটাই হচ্ছে– ওয়াজিব।[দেখুন: 127742 নং প্রশ্নোত্তর] তাই ওযুর ফরযগুলোই হচ্ছে– ওযুর রুকন ও ওযুর ওয়াজিব; যেগুলো দিয়ে ওযু সংঘটিত হয় এবং যেগুলো ছাড়া ওযুর অস্তিত্ব হতে পারে না।

পক্ষান্তরে ওযুর সময় বিস্‌মিল্লাহ্‌ বলা: ইমাম আহমাদের মতে, এটি ওয়াজিব।

জমহুর আলেমের মতে, এটি ওযুর সুন্নত; ওয়াজিব নয়। ইতিপূর্বে 21241 নং প্রশ্নোত্তরে তা উল্লেখ করা হয়েছে।

দুই:

ওযুর সুন্নতসমূহ অনেক।

শাইখ সালেহ আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ্‌) বলেন: ওযুর সুন্নতসমূহ হচ্ছে-

১। মেসওয়াক করা। এর স্থান হচ্ছে- গড়গড়ার সময়। যাতে করে মেসওয়াক ও গড়গড়ার মাধ্যমে মুখ পরিস্কার করা যায়; যার ফলে ইবাদত, তেলাওয়াত ও আল্লাহ্‌র সাথে গোপন আলাপের জন্য নিজেকে তৈরী করে নেয়া যায়।

২। ওযুর শুরুতে চেহারা ধৌত করার আগে হাতের কব্জিদ্বয় তিনবার ধৌত করা। এ বিষয়টি হাদিসে উদ্ধৃত হওয়ার কারণে এবং যেহেতু হস্তদ্বয় হচ্ছে- ওযুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পানি ব্যবহার করার মাধ্যম।তাই এ দুটোকে ধৌত করার মাঝে সমস্ত ওযুর জন্য সতর্কতা অবলম্বন পাওয়া যায়।

৩। চেহারা ধৌত করার আগে গড়গড়া কুলি ও নাকে পানি দেয়া; অনেক হাদিসে এ দুটো দিয়ে শুরু করার কথা উদ্ধৃত হওয়ার কারণে। রোযাদার না হলে প্রকৃষ্টভাবে এ দুটো আদায় করবে। গড়গড়া কুলি প্রকৃষ্টভাবে আদায় করার অর্থ হল: গোটা মুখের ভেতরে পানি ঘুরানো। প্রকৃষ্টভাবে নাকে পানি দেয়ার অর্থ হচ্ছে: পানি টেনে একেবারে নাকের উপরে তুলে নেয়া।

৪। পানি দিয়ে ঘন দাঁড়ি খিলাল করা; যাতে করে ভেতরে পানি ঢুকে। দুই হাত ও দুই পায়ের আঙ্গুলগুলো খিলাল করা।

৫। ডান হাত ও ডান পা দিয়ে শুরু করা।

৬। মুখমণ্ডল, হস্তদ্বয় ও পা-যুগল ধৌত করার ক্ষেত্রে একবারের অধিক তিনবার ধৌত করা।[আল-মুলাখ্‌খাস আল-ফিকহি (১/৪৪-৪৫) থেকে সমাপ্ত]

সুন্নতের মধ্যে আরও রয়েছে:

জমহুর আলেমের মতে, কানদ্বয় মাসেহ করা। ইমাম আহমাদের মতে, কানদ্বয় মাসেহ করা ওয়াজিব। ইতিপূর্বে 115246 নং প্রশ্নোত্তরে তা বর্ণিত হয়েছে।

ওযুর পরে মুস্তাহাব হচ্ছে: আশহাদু আন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহ, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহ। আল্লাহুম্মাজ আলনি মিনাত্তা ওয়াবীন ওয়াজ আলনি মিনাল মুতাতাহ্হিরীন। সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা আশহাদু আন লা ইলাহা ইল্লা আনতা আসতাগফিরুকা ওয়া আতুবু ইলাইক। (অর্থ- “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে তাওবাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন এবং পবিত্রতা অর্জনকারীদেরও অন্তর্ভুক্ত করুন। হে আল্লাহ! আপনার প্রশংসাসহ পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি। আমি সাক্ষ্য দেই যে, আপনি ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, আমি আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আপনার নিকট তাওবা করছি।)

ওযুর সম্পূর্ণ বিবরণ জানতে 11497 নং প্রশ্নোত্তর দেখুন।

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

answer

সংশ্লিষ্ট প্রশ্নোত্তরসমূহ

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android