0 / 0

যে ব্যক্তি একাকী রমজান মাসের নতুন চাঁদ দেখেছে তার জন্য কি সিয়াম পালন করা অনিবার্য?

প্রশ্ন: 66176

প্রশ্ন: যে ব্যক্তি একাকী রমজান মাসের নতুন চাঁদ দেখেছে তার জন্য কি সিয়াম পালন করা অনিবার্য? যদি তা অনিবার্য হয় এর সপক্ষে দলীল কী?

উত্তর

আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা

সমস্তপ্রশংসাআল্লাহরজন্য।যেব্যক্তিরমজানমাসের নতুনচাঁদঅথবাশাওয়ালমাসেরনতুন চাঁদএকাইদেখেছেএবংএব্যাপারেবিচারককেঅথবাস্থানীয়লোকজনকেঅবহিতকরেছেকিন্তুতারাতারসাক্ষ্যগ্রহণকরেনিতবেকিসেএকাইরোজাপালনকরবে?নাকিসবারসাথেরোজাপালনকরবে-এব্যাপারেআলেমগণেরমাঝেতিনটিঅভিমতরয়েছে:প্রথমমত:

সেব্যক্তিমাসের শুরু ওসমাপ্তি উভয়ক্ষেত্রে তারনিজেরদেখাঅনুসারেএকাকীআমলকরবে।মাসেরশুরুতেতিনিএকাকী রোজাশুরুকরবেনএবংমাসেরশেষেনিজেরদেখা অনুযায়ীরোজা ছাড়বেন।এটিইমামশাফেয়ীরঅভিমত।

তবেতিনিতাগোপনেকরবেন।প্রকাশ্যেমানুষেরবিরুদ্ধাচরণেলিপ্তহবেননা।যাতেমানুষতারসম্পর্কেখারাপধারণানাকরে।কারণএক্ষেত্রেরোজাদারগণতাকেবে-রোজদারমনেকরবে।দ্বিতীয়মত :

সেব্যক্তিনিজেরদেখাঅনুসারেমাসেরশুরুতেআমলকরবেনএবংএকাকীরোজারাখা শুরুকরবেন।তবেমাসেরশেষেনিজেরদেখাঅনুসারেআমলকরবেননা।বরংঅন্যসবারসাথেরোজাছাড়বেনকরবে।এটিঅধিকাংশআলেমেরমত। এদেরমধ্যেরয়েছেনইমামআবুহানিফা,ইমামমালেকওইমামআহমাদরাহিমাহুমুল্লাহ।

আরএ মতটি গ্রহণকরেছেন শাইখ ইবনেউছাইমীনরাহিমাহুল্লাহ। তিনি বলেছেন:“এটি সাবধানতামূলকঅভিমত। এমত গ্রহণেরমাধ্যমে আমরারোজা থাকা ওছাড়া উভয়ক্ষেত্রেসাবধানতাঅবলম্বনকরেছি। রোজাপালনেরক্ষেত্রেআমরা তাকে বলব:আপনি রোজারাখুন। কিন্তু রোজাছাড়ারব্যাপারেআমরা তাকে বলব:আপনি রোজাছাড়বেননা; বরংরোজারাখতে থাকুন।”সমাপ্ত[আশ-শারহুলমুমতি(৬/৩৩০)]

তৃতীয়মত :

সেব্যক্তিমাসের শুরু অথবাসমাপ্তি কোনক্ষেত্রে তারনিজেরদেখাঅনুসারেআমল করবেনা। বরং সবার সাথেরোজারাখবেএবং সবারসাথে রোজা ছাড়বে।

এক বর্ণনামতেএঅভিমতেরপক্ষে রয়েছেনইমামআহমাদ।শাইখুলইসলামইবনেতাইমিয়্যাহএমতটিকেসমর্থনকরেছেনএবং এরসপক্ষে অনেকদলীলপেশকরেছেন।তিনিবলেন:“আরতৃতীয়মত হচ্ছে- সেব্যক্তিঅন্যসবমানুষেরসাথেরোজারাখবেন এবং সবারসাথে রোজাছাড়বেন। উল্লেখিতমতগুলোরমধ্যেএমতটি বেশিশক্তিশালী। এরপক্ষেদলীলহচ্ছেনবীসাল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লামএরবাণী:“আপনাদেররোজাহবে সেদিন,যেদিন আপনারা সকলে রোজারাখেনএবং আপনাদেরঈদহবে সেদিনযেদিন আপনারা সকলে ঈদউদযাপন করেন। আর আপনাদেরঈদুলআযহাহবে সেদিন যেদিন আপনারা সকলে পশুকোরবানী করেন।’’[হাদিসটিবর্ণনাকরেছেন তিরমিযী এবং তিনিবলেছেন:হাদিসটি হাসান-গরীব, এটি আরও বর্ণনাকরেছেন আবু দাউদএবং ইবনে মাজাহ।তিনি শুধু ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহারপ্রসঙ্গউল্লেখ করেছেন। এবং ইমামতিরমিযী আব্দুল্লাহইবনে জাফরের সূত্রেউসমান ইবনে মুহাম্মদ হতে, তিনিআলমাকবুরি হতে, তিনি আবুহুরাইরা(রাঃ) হতেবর্ণনা করেন যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম বলেছেন:“রোজা হল সেদিনযেদিন আপনারা সকলে রোজা পালন করেন। ঈদুল ফিতর (রোজাভঙ্গের ঈদ) হলসেদিন যেদিন আপনারাসকলে রোজা ভঙ্গ করেন। আরঈদুলআযহা হল সেদিনযেদিন আপনারা সকলে পশুকোরবানী করেন।’’তিরমিযী বলেন: এই হাদিসটিহাসান-গরীব। তিনি আরোবলেন:‘আলেমগণের মধ্যে অনেকে এইহাদিসটিকেব্যাখ্যাকরতেগিয়ে বলেন:এর অর্থ হল- রোজাশুরু করতেহবে ও ঈদুল ফিতর উদযাপনকরতে হবে সম্মিলিতভাবে,সকল মানুষেরসাথে।” সমাপ্ত [মাজমূউল ফাতাওয়া (২৫/১১৪)]

তিনিআরও দলীলহিসেবে পেশ করেনযে, কেউযদি জিলহজ্বমাসের নতুন চাঁদএকাকী দেখে তবে আলেমগণের কেউ একথাবলেননি যে, (হজ্জ পালনের ক্ষেত্রে) সে একাকী আরাফাতেঅবস্থান করবে।তিনিআরো উল্লেখকরেন যে,এই মাসয়ালার মূলভিত্তিহচ্ছে- আল্লাহ তাআলা এই হুকুমকে নতুন চাঁদ ও মাসেরসাথে সম্পৃক্তকরেছেন।তিনিবলেন:

( يسألونكعنالأهلةقلهيمواقيتللناسوالحج )

“লোকেরা আপনাকে নতুন মাসের চাঁদসম্পর্কে জিজ্ঞেসকরে। আপনিতাদেরকে বলেদিনএটা মানুষের (বিভিন্নকাজ-কর্মের)এবং হজ্জেরসময়নির্ধারণ করার জন্য।”[২ সূরা আল-বাক্বারা:১৮৯]আয়াতেকারীমাতেআহিল্লাহ(أهلة) শব্দটি হিলাল(هلال) শব্দেরবহুবচন।হিলাল বলতেবুঝায়- যা দিয়েকোনঘোষণা দেয়া হয়বা কোনকিছু প্রচার করা হয়।তাই আকাশেযদি চাঁদ উদিত হয় আর মানুষ সে সম্পর্কেনা জানেএবং তাদিয়ে মাসগণনা শুরু নাকরে তবেতো তা‘হিলাল’হলো না।অনুরূপভাবে شهر(শাহরবা মাস) শব্দটিشهرة (শুহরতবা প্রসিদ্ধি) শব্দ থেকে উদ্ভূত হয়েছে।সুতরাং মানুষের মাঝে যদিপ্রসিদ্ধিনাপায় তবে তোনতুন মাস শুরুহয়েছে বলে গণ্যকরা হবেনা। অনেকমানুষ এই মাসয়ালাতেভুল করেন এই ধারণারকারণেযে, তারামনে করেন আকাশে নতুন চাঁদউদিত হলেইতো তামাসের প্রথম রাত্রি হিসেবেধরা হবে-চাইসেটা মানুষের মাঝে প্রচারলাভ করুন অথবানা করুক, তারা এর দ্বারানতুন মাসগণনাআরম্ভ করুক বা না করুক। কিন্তুব্যাপারটিএমন নয়; বরং মানুষেরকাছে নতুনচাঁদ প্রকাশিতহওয়া এবংএর দ্বারাতাদের নতুন মাসশুরু করাআবশ্যক। এজন্য নবীসাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম বলেছেন:

( صومكميومتصومون،وفطركميومتفطرون،وأضحاكميومتضحون )

“আপনাদেররোজাহবে সেদিনযেদিনআপনারাসকলেরোজা পালনশুরু করেন। আপনাদেরঈদহবেসেদিনযেদিনআপনারাসকলেরোজা ভঙ্গকরেন। আরআপনাদেরঈদুলআযহাহবে সেদিনযেদিনআপনারাসকলেপশুকোরবানীকরেন।’’অর্থাৎযেদিনটিকেআপনারারোজা পালন,ঈদুলফিতর উদযাপনএবংঈদুলআযহাউদযাপনেরদিনহিসেবেজানতে পেরেছেন। আরযদিআপনারাতানা-জানতেপারেন তবেএকারণেআপনাদেরউপরকোনহুকুমবর্তাবেনা।”সমাপ্ত[মাজমূলফাতাওয়া (২৫/২০২)]

এইমতানুযায়ীফতোয়াদিয়েছেনশাইখআব্দুলআযিয বিন বায[মাজমূফাতাওয়াআশ-শাইখ(১৫/৭২)]وحديث : ( الصوميومتصومون…) صححهالألبانيرحمهاللهفيصحيحسننالترمذيبرقم (561)

“রোজাহবে সেদিনযেদিনআপনারাসকলেরোজা পালনশুরু করেন…’’হাদিসটিকেআলবানীসহীহসুনানেতিরমিযিগ্রন্থে সহীহবলেচিহ্নিতকরেছেন (৫৬১)।

আরওদেখুন ফিকাহবিদগণের মতামত- আল মূগনী (৩/৪৭, ৪৯), আল মাজমূ(৬/২৯০),আল-মাওসুআআল-ফিক্বহিয়্যাহ (১৮/২৮)]আল্লাহই সবচেয়েভাল জানেন।

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android